৪৮ জেলায় বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ: প্রতিদিন ৫০০ টাকা ভাতা সহ বড় সুযোগ!

বাংলাদেশ সরকার দেশের তরুণদের কর্মসংস্থান ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য এক বিশাল সুযোগ নিয়ে এসেছে। দেশের ৪৮টি জেলায় মোট ২৮,৮০০ জনকে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রশিক্ষণ চলাকালীন প্রত্যেককে দৈনিক ৫০০ টাকা ভাতা প্রদান করা হবে। এই উদ্যোগ বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং খাতকে আরো শক্তিশালী করার পাশাপাশি, দেশের তরুণদের আয়ক্ষম করে তুলতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

এই পোস্টে আমরা এই প্রশিক্ষণের বিস্তারিত, আবেদন পদ্ধতি, এবং কীভাবে এটি আপনার জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে তা আলোচনা করব।

বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং: কেন এত জনপ্রিয়?

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় পেশা। শুধুমাত্র নিজের দক্ষতা ও ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই ঘরে বসে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং খাত প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের তরুণরা তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর বিভিন্ন কাজে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করে বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে নাম কামাচ্ছে।

সরকারের এই উদ্যোগ তরুণদের ফ্রিল্যান্সিং জগতে প্রবেশের জন্য সঠিক দিকনির্দেশনা ও প্রয়োজনীয় দক্ষতা প্রদান করবে।

কাদের জন্য এই প্রশিক্ষণ?

এই প্রশিক্ষণটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে দেশের বেকার, কর্মজীবী এবং নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য। তবে এর জন্য কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে:

  • আবেদনকারীর ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস।
  • বয়সসীমা ১৮ থেকে ৩৫ বছর।
  • নির্ধারিত জেলায় বসবাসকারী এবং প্রযুক্তিতে আগ্রহী।

এছাড়াও, নারী প্রার্থীদের জন্য বিশেষ সুযোগ রাখা হয়েছে।

কী কী শেখানো হবে এই প্রশিক্ষণে?

এই প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামটি ডিজাইন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের ফ্রিল্যান্সিং স্কিল শেখানোর জন্য। প্রোগ্রামে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে:

স্প্রেডশিট ম্যানেজমেন্ট এবং অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সাপোর্ট।

গ্রাফিক ডিজাইন:

লোগো ডিজাইন, ব্যানার তৈরি, এবং অ্যাডোবি ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটরের ব্যবহার।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট:

HTML, CSS, JavaScript, ওয়ার্ডপ্রেস এবং ই-কমার্স সাইট ডেভেলপমেন্ট।

ডিজিটাল মার্কেটিং:

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, SEO, ইমেইল মার্কেটিং এবং গুগল অ্যাডস।

কনটেন্ট রাইটিং ও ব্লগিং:

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কনটেন্ট লেখার চাহিদা পূরণ এবং ব্লগ তৈরি।

ডেটা এন্ট্রি ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স:

স্প্রেডশিট ম্যানেজমেন্ট এবং অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সাপোর্ট।

প্রশিক্ষণের সুবিধাসমূহ:

এই প্রশিক্ষণ শুধু দক্ষতা উন্নয়নের জন্য নয়, এর সঙ্গে আছে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা:

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট খোলা ও গাইডলাইন:
যাঁরা নতুন, তাঁদের জন্য মার্কেটপ্লেসে কাজের সুযোগ তৈরি করা হবে

সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ:
কোনোরকম ফি ছাড়াই এটি পরিচালিত হবে।

প্রতিদিন ৫০০ টাকা ভাতা:
প্রশিক্ষণ চলাকালীন প্রতিদিনের যাতায়াত ও খরচ মেটানোর জন্য ভাতা প্রদান।

আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহারের সুযোগ:
প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত হবে ল্যাপটপ, সফটওয়্যার ও ইন্টারনেট।

সার্টিফিকেট প্রদান:
সফল সমাপ্তির পর একটি সরকার-স্বীকৃত সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।

আবেদন করার পদ্ধতি:

এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে চাইলে আপনাকে নীচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:

  1. অনলাইন আবেদন:
    যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করতে হবে।
  2. ডকুমেন্ট জমা:
    • জাতীয় পরিচয়পত্র।
    • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র।
    • পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
  3. বাছাই প্রক্রিয়া:
    আবেদন জমা দেওয়ার পর, নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী প্রার্থী বাছাই করা হবে।

নোট: আবেদন করার সময় নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনে চলুন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করুন।


Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart
error: Content is protected !!